গাজীপুরে নাওজোর ফ্লাইওভারের নিচে কাপড় দিয়ে ঘর বানিয়েছেন শেফালী বেগম। সেই ঘরে প্রতিবন্ধী সন্তান আর বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। এমনি এক দৃশ্য চোখে পড়ে গাজীপুরের ঢাকা-টাংগাইল মহাসড়কের নাওজোর ফ্লাইওভারের নিচে। বৃদ্ধ মা তার প্রতিবন্ধী সন্তানের যত্ন নিচ্ছে পাশেই কাপড়ের তৈরি একটি ঘরে অসুস্থ স্বামী শুয়ে আছে। অর্থে অভাবে স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছে না শেফালী বেগম। কখনো খেয়ে, কখনো না খেয়ে দিন পার করছে এই অসহায় পরিবারটি। মাথাগুজার ঠাঁই না থাকায়, শত কষ্টে নিরুপায় হয়ে তিন বছর ধরে আশ্রয় নিয়ে আছেন ফ্লাইওভারের নিচে। রোদ বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ফ্লাইওভারের নিচে পুরানো কাপড় আর বাঁশ দিয়ে বানিয়েছেন ঘর। ধুলো বালির মধ্যেই মাটির উপর পাটি বিছিয়ে প্রতিবন্ধী সন্তান ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে দিনের পর দিন পার করছেন শেফালী বেগম। প্রতিবন্ধী সন্তানটি পায়নি কোন সরকারি ভাতা। এদিকে জীবন-জীবিকার তাগিদে কুড়িগ্রাম থেকে প্রতিবন্ধী সন্তান ও বৃদ্ধ স্বামীকে সাথে নিয়ে গাজীপুরে আসেন শেফালী বেগম। রুম ভাড়া নেওয়ার মতো সামর্থ্য না থাকায় ফ্লাইওভারের নিচে আশ্রয় নেন। সমাজসেবা কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কাছে মানবিক সাহায্যের আবেদন করেও পাননি কোন সহযোগিতা। গত তিন বছর ধরে প্রতিবন্ধী সন্তান ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে নাওজোর ফ্লাইওভারের নিচে মানবেতর দিন কাটছে শেফালী বেগমের। সন্তানের নামে প্রতিবন্ধী ভাতা ও স্বামীর জন্য বয়স্ক ভাতা কোনটা পাচ্ছেন না তারা। এসময় নাজিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বলেন,আমরা বিগত তিন বছর যাবত দেখে আসতেছি বহু কষ্টে দিন পার করছেন তার অসুস্থ স্বামী ও প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে।তাদেরকে যদি সরকারি ভাবে সহায়তা করা হতো, তাহলে হয়তো বা তাদের অনেকটা উপকার হতো। কথার এক পর্যায়ে নাসিমা বেগম নামের আরেকজন বলেন,সবাই শুধু আশার বাণী শুনিয়ে যায়। কেউ এই অসহায় পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ায়নি।এই হতদরিদ্র পরিবারকে পূর্ণবাসনের জোর দাবি জানাচ্ছি। এবিষয়ে গাজীপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক এস. এম. আনোয়ারুল করিম বলেন, এই অসহায় পরিবারটির বিষয়ে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম।অতি দ্রুতই পরিবারটির পুনর্বাসন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। একটু সাহায্যের জন্য সবার দারে দারে ঘুড়েছেন বৃদ্ধা শেফালী বেগম,পেয়েছেন শুধু আশ্বাস। তাই তো আর কোন আশ্বাস নয় স্বামী ও প্রতিবন্ধী সন্তানের নামে সরকারি ভাতা দাবী জানান এই বৃদ্ধা।