• শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন

গাজীপুরের নাওজোড়, কড্ডা এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে চোরাই তেলের দোকান

টুটুল তালুকদার গাজীপুর / ১৪৮ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

টুটুল তালুকদার, গাজীপুর :

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দুই পাশে সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে গড়ে উঠেছে একাধিক চোরাই জ্বালানি তেলের দোকান। প্রতিদিন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি থেকে প্রকাশ্যে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মাসোয়ারা দিয়েই এসব ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার (১১ অক্টোবর) গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার নাওজোড় ও কড্ডা এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে চোরাই জ্বালানি তেলের দোকান। মহাসড়কের পাশে থেমে থাকা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও পণ্যবাহী পরিবহনের চালক-হেলপাররা পাইপ দিয়ে ট্যাংক থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল নামিয়ে বিক্রি করছেন। স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত একের পর এক গাড়ি দাঁড় করিয়ে বালু ও তেল নামায়। এতে যানজটের পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে। পথচারীরা প্রতিবাদ করলে বালু ব্যবসায়ী ও তেল দোকানদাররা হুমকি-ধমকি দেন। এমনকি সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়। জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা ঝুপড়ি ঘরের মতো এসব দোকানের নেই কোনো সাইনবোর্ড, নেই বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমোদন, ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র কিংবা আইনসঙ্গত লাইসেন্স। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাইপাস এলাকায় মুরসালিনের চোরাই জ্বালানি তেলের দোকানের কিছু দূরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় (জিয়া, রাকিব, সালাম, ওবায়দুল) ও কড্ডা এলাকায় (আমির, নূরু ইসলাম) চোরাই জ্বালানি তেলের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এসব দোকান দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এক ট্রাকচালক বলেন, ‘আমরা চায়ের দোকানে বসলেও মানুষ ভাবে তেল বিক্রি করছি। এজন্য এ এলাকায় গাড়ি থামানো ঝুঁকিপূর্ণ। ’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, ‘আমরা তো কম দামে কিনে ন্যায্য দামে বিক্রি করি। চোর হলো চালকেরা। পুলিশ থেকে সাংবাদিক-সবাইকে ম্যানেজ করেই ব্যবসা করতে হয়। ’অনুসন্ধানে জানা যায়, দোকান খোলা রাখতে মাসিক নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার ওসির নাম ভাঙিয়ে জ্বালানি তেল দোকানদার ‘আমির’ ও ‘মুরসালিন’ নামের দুই ব্যক্তি দোকানিদের কাছ থেকে মাসিক এগারো হাজার টাকা করে কালেকশন করে। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে ওবায়দুল নামে আরেক দোকানদার। তাছাড়া প্রতিদিন টহল পুলিশকে একশত টাকা করে দেন দোকানদাররা। এছাড়া সাংবাদিকদেরও নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়, নইলে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্বালানি তেল বিক্রেতা জানান, থানার পক্ষ থেকে মাসিক কালেকশন হিসেবে প্রতিটি দোকান থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আমাদের দিতে হয়। প্রত্যেক দোকান থেকে টাকা তোলার দায়িত্বে থাকে আমির ও মুরসালিন। আমির দোকান প্রতি এগারো হাজার টাকা করে তুলে মুরসালিনকে দেয়। তিনি আরও জানান, ওসির বডিগার্ড বুলবুল হলো মুরসালিনের এলাকার লোক, আর আমিরের শ্বশুরবাড়ির সম্পর্ক রয়েছে।বাসন থানার ওসি শাহীন খানকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়, এটা আমাদের সবাই জানে। টাকা না দিলে দোকান চালানোই মুশকিল। তবে ঘটনা অস্বীকার করে তেল বিক্রেতা আমির বলেন, ‘আমার কোনো তেলের দোকান নেই, আমি মুরসালিনকে কেউ চিনি না, এইসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ’এ বিষয়ে বাসন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিন খান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত ছিলাম না। ওসির নাম ভাঙিয়ে অনেকে অনেক কিছু করে। তবে আমি এ বিষয়ে শিগগিরই যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।


More News Of This Category
bdit.com.bd