অথই নূরুল আমিন
সম্মানিত প্রিয় পাঠক, আজকের লেখাটি শুরু করার পূর্বে। সবাইকে জানাচ্ছি বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।কথা থাকে যে, একটি দেশের সরকারের মুল ভিত্তি থাকা, বিশেষ করে নিজস্ব আয় রোজগার থাকা একান্তই প্রয়োজন। বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকারের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি,লক্ষ্য করছি বিগত সরকারের আমল গুলোতে। লক্ষ্য করে দেখেছি। একটি জাতীয় বাজেটে প্রতি একশ টাকায়। বাংলাদেশ সরকারের মুল ধন পাঁচ টাকা। ভ্যাট ট্যাক্স পনেরো টাকা। বিদেশী ঋণ ষাট টাকা। দান আনুদান বিশ টাকা। এভাবেই বিগত তেপ্পান্ন বছর ধরে আমাদের দেশের সরকার গুলো চলেছে। চলতে চলতে লোকসানী হয়ে, আদমজী জুট মিল থেকে শুরু করে শত শত মিল কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখানে বিগত সময়ের সবগুলো সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতার প্রমাণ রেখে গেছে সর্বক্ষেত্রে । দুর্নীতির কথা এখানে নাই বা বললাম। কথা থাকে যে, বিগত সরকার গুলো যখনই লোকসানে পরেছে। তখনই দেশের সরকারি নিয়োগ বন্ধ হয়েছে। আর ধীরে ধীরে দীর্ঘ তেপ্পান্ন বছরের ইতিহাসে আজকে দেশের মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ জনগণ বেকার হয়ে সমাজের পরিবেশ নষ্ট করে চলেছে। বেকারের কষ্টে অনেকেই চুরি ছিনতাই ডাকাতিও প্রতারণার মত দোষনীয় পথ বেছে নিচ্ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার বোকার মত মাঝে মাঝে পুলিশ নিয়োগ দিচ্ছে। যা বিগত সরকার গুলো আহম্মকের পরিচয় দিয়ে গেছে। ফল তো জিরো। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় এসে জনগণের কথা, তারা আর কোন দলই মাথায় রাখেনি। বেকারত্ব না কমালে মন্ধ কাজ কখনও বন্ধ করা সম্ভব নয়। এরকম চিন্তা কখনও কোনো রাজনৈতিক দলগুলো করেনি। এদিকে একটি রাজনৈতিক দল যখন ক্ষমতায় আসে। তখন তাদের তিনশ এমপি লাগে। কয়েক ডজন মন্ত্রী লাগে। প্রতিমন্ত্রী লাগে। এখানে এতো বড় একটি প্যানেলের, প্রতি মাসে যা বেতন ভাতা লাগে। তার সবই জনগণের উপরে চাপিয়ে দেয়া হয়। না দিয়েও কোনো উপায় নেই। তার কারণ হলো। সরকারের নিজস্ব কোনো আয় রোজগার না থাকা এর মুল কারণ। সরকারের রেলওয়ের মাঝে লোকসান। সরকারের বিমানে লোকসান। এদিকে সকল এমপি- মন্ত্রীরা দুর্নীতির সাথে জড়িত। তাই হঠাত করে বাজারে গিয়ে দেখবেন । এগারোশ টাকা রিম, বসুন্ধরা কাগজের মূল্য আঠারোশ টাকা হয়ে গেছে। সত্তর টাকা কেজির সোয়াবিন তেল একশ বিশ টাকা কেজি হয়ে গেছে। তিনশ পঞ্চাশ টাকার সিমেন্টের ব্যাগ পাঁচশ পঁচিশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মানে সরকার মোটা অংকের টাকা দাবি করে কোম্পানির কাছ থেকে নিয়ে গেছে। এখন কোম্পানি জনগণের উপরে এর দায় ছাপিয়ে দিচ্ছে। প্রিয় পাঠক, এবার চিন্তা করুন। একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থেকে জনগণের মাথায় কাঁঠাল রেখে, কিভাবে তারা তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করে আসছে সারাজীবন। এছাড়া বাৎসরিক জাতীয় বাজেটে সারাজীবন প্রায় তিন হাজার পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করে কাগজে কলমে। এই সকল পণ্য জনগণ কিনে চড়া দামে। আর রাজনৈতিক সরকার সেই জনগণের টাকায় সারাজীবন চলে আসছে। এর পরেও জনগণের জন্য তারা কিছু করে না। বন্যা হলে খরা হলে। সেখানে জনগণের পক্ষে আর এই সরকারকে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ সরকারের এমন কোনো ব্যাংক নেই যে, আপনি বিপদে পরলে। ওখান থেকে পাঁচ হাজার টাকা লোন আনতে পারবেন। না। তা পারবেন না। এদিকে বিদেশী টাকা ঋণ করে রাস্তা- ঘাট, সড়কের কাজ করা হয়। সেই টাকাও জনগণের কাছ থেকে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করে উসুল করা হয়। তারপরও জনগণের জন্য যেটুকু করার কথা তাও তারা করে না। যেমন ঘুষ ছাড়া সরকারি চাকরি পাওয়া যায় না। আবার ঘুষ ছাড়া সরকারি অফিস- আদালতে কোনো রকম কোনো সেবা পাওয়া যায় না। তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় কেন আসবে? বিগত সময়ের সকল সরকার শুধু জনগণকে শোষণই করে গেছে। সামনে যারা আসবে তারাও তাই করবে। যেহেতু সরকারের নিজস্ব কোনো আয় রোজগার নেই।ততদিন পর্যন্ত সকল রাজনৈতিক সরকার জনগণকে শোষণ করবে। যতদিন পর্যন্ত সরকারের নিজস্ব আয় রোজগার না হবে। অথচ সরকারের যে নিজস্ব আয় রোজগার লাগে। বিশেষ করে ১৯৯১ সন থেকে ২০২৪ যেসকল সরকার গুলো ক্ষমতায় ছিল, তারা কেউ এই বিষয়টি জানতই না। জানলে তারা মিল কারখানা বন্ধ করতো না। আরো নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতো। বতর্মান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিদেশী বিনিয়োগকারী আনার চেষ্টা করছে। এখানে হয়তো সামান্য কিছু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এর মানে এখানে সরকারের নিজস্ব আয় আছে তা কিন্তু নয়। তবে প্রস্তাব দিয়েছি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে। আমাকে যদি প্রধান উপদেষ্টার ছায়া পরামর্শক অথবা মানবসম্পদ উন্নয়ন পরামর্শক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে এক বছরের ভিতরে সরকারের নিজস্ব আয় প্রতি মাসে একশ কোটি টাকা আসবে। যা বিদেশী কোনো বিনিয়োগ কারী ছাড়া। তবেই রাজনৈতিক সরকারের জন্য ভালো হবে। যখন তখন পণ্যের দাম বাড়াতে হবে না। পরিশেষে বাংলাদেশেরও বিদেশের সর্বস্তরের জনগণকে শুভ বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের লেখাটি এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী
১৪ এপ্রিল ২০২৫