অথই নূরুল আমিন
বাংলাদেশে বর্তমানে নতুন পুরাতন চার ডজনের বেশি রাজনৈতিক দল রয়েছে। এ যেন পুরান ঢাকার কলা পট্রির কলার মতো ডজন আর ডজনে ভরপুর । উক্ত রাজনৈতিক দলগুলো, প্রায় সবাই আগামী নির্বাচনে তিনশ আসনে প্রার্থী দেবেন বলে ঘোষনাও দিয়েছেন অনেকেই। বেশকিছু রাজনৈতিক দল এর মধ্যে তিনশ আসনেই প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত ও করেছেন। এখানে কথা থাকে যে, আপনি কোন দলের সাথে আছেন? সেই রাজনৈতিক দল কি দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, কোনো ইশতেহার ঘোষণা করেছে? না। কেউ তাদের ইশতেহার এখনও ঘোষণা করেননি। আজকে যদি একটি রাজনৈতিক দল,আগামী রাষ্ট্র পরিচালনা নিয়ে একটি সুন্দর ইশতেহার ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয়। তাহলে সেই রাজনৈতিক দল দেশ চালাবে কিভাবে? চালাতে পারবে না। ঠিক তখনই ওরা উল্টাপাল্টা কাজ করবে। আর দেশের জনগণ, আমরা সবাই হবো ভূক্তভোগী। এরকম ফালতু দলের সঙ্গ ছেড়ে দেওয়াই ভালো বলে মনে করি। বাংলাদেশের মধ্যে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে সরকারি চাকরিজীবিরা। উচ্চ পদস্থ যারা সরকারি চাকরি করছেন। তাদের বেতন জাতীয় গ্রেটের আয়ের চেয়ে তিরিশ গুণ বেশি। আবার পিয়ন থেকে চকিদার তাদের বেতন জাতীয় গ্রেটের আয়ের চেয়ে চল্লিশ গুণ কম। আগামীতে এই বৈষম্য দূর করতে হবে। সরকারি প্রায় সকল কর্মচারীরা জনগণের কাছ থেকে ঘুষ খাচ্ছে। এই ধরনের ঘুষ খাওয়া শতভাগ বন্ধ করতে হবে। আবার ঘুষ দিয়ে সরকারি চাকরি নিতে হচ্ছে। এগুলো ও শতভাগ বন্ধ করতে হবে। ভূমিহীন – গৃহহীনদের জন্য আলাদা সনাক্তকরণ কার্ড প্রদান করতে হবে। উক্ত কার্ড দিয়ে স্থলপথে এবং জলপথের পরিবহন খাতে অর্ধেক ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এবং শিক্ষা প্রতিষ্টানে সন্তানের শিক্ষা খাতে সর্বমোট ব্যয়ের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করতে পারবে। উক্ত কার্ড দিয়ে অর্ধেক টাকায় হাসপাতাল বা ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারবে। এছাড়া একই কার্ড দিয়ে তারা টিসিবির পণ্য ও যেন ক্রয় করতে পারে। তার কারণ হলো, যাদের ভূমি আছে,তারা ভূমি থেকেও উপার্জন করতে পারে। এবং নিজেরাও চাকরি বা ব্যবসা করতে পারে এবং উপার্জন করতে পারে। কিন্তু ভূমিহীন বা গৃহহীন জনগুষ্টি শুধুমাত্র তাদের দৈহিক শ্রমের অর্থ উপার্জন করে থাকেন। যার ফলে তাদের জন্য সরকারি ভাবে উপরে উল্লেখিত সুযোগ সুবিধা দেয়া আবশ্যক মনে করি। সরকারি চাকরিতে নতুন করে, নতুন আইন করে,নতুন নিয়োগ দেয়া জরুরি। চাকরির মেয়াদ হবে বিশ বছর। বর্তমান স্কেলের বেতনের চেয়ে ৫০% কম বেতন থাকবে। আর বিগত সময়ে যারা চাকরি নিয়েছেন। সেটা ধীরে ধীরে অবসরপ্রাপ্ত হতে হতে কমতে থাকবে। যতদিন পর্যন্ত নতুন সরকার, সরকারি নিয়োগ এই পদ্ধতিতে করতে পারবে না। ততদিন পর্যন্ত কোনো সরকার ক্ষমতায় এসেও জনসেবা করতে পারবে না। তার কারণ সরকারি কর্মচারিদের পিছনে যদি রাষ্ট্রের আয় কৃত সব টাকা ব্যয় হয়ে যায়। তাহলে অন্য সেবা গুলো সরকার করবে কিভাবে? যার ফলে সরকারগুলো জনসেবা থেকে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। দেশের মামলা জট কমাতে হবে। একদম জিরো করতে হবে। তা না হলে দেশের ৬০% ভাগ জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন হবে না। মামলা করণকৌশল আরো জটিল করতে হবে। মামলা মানেই বাদী- বিবাদী দুজনেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার ফলে মামলার ধরন ঠিক করে খরচের হার সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করে দিতে হবে। দেশীয় মাছ এবং পশু পাখিদের জন্য অভয়ারণ্য করতে হবে। যার মেয়াদ কাল থাকবে দশ বছর মেয়াদী। দেশের আগামী প্রজন্মকে মানুষের মত মানুষ করতে হলে, শিক্ষা আরো আধুনিক এবং যুগোপযোগী করতে হবে। এবং শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ অবৈতনিক করতে হবে। দেশের ভূমিহীন গৃহহীন যাট উর্ধ্বো বয়স্কদের জন্য পুর্নবাসন করতে হবে। দেশের শিক্ষিত অশিক্ষিত মিলে কমপক্ষে দুই কোটি নারী পুরুষের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। দশটি নাগরিক সুবিধাসহ জীবনমান উন্নত করতে ইত্যাদি বিধিব্যবস্থা চালুসহ ইশতেহার ঘোষণা করতে সক্ষম দেশের কোন রাজনৈতিক দলগুলো তা এখন দেখার অপেক্ষায় আছি। নাকি সারাজীবন জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষায় গুড়ে বালি থাকবে কিনা। কথায় বলে গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল। সেই অবস্থা সারাজীবন থাকবে কিনা?
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী
২৩ এপ্রিল ২০২৫