নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ভাওয়াল মির্জাপুর ওয়াশ গার্মেন্টসে যাওয়ার পথে অটোরিকশা থেকে চেতনানাশক প্রয়োগে এক নারীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবিসহ গনধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী নারী সালমা আক্তার (৩০) গাজীপুর মহানগর বাসন থানার দিঘিরচালা গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলী ও হালিমা বেগমের মেয়ে। সালমা আক্তারের চার বছরের পুত্র সন্তানকে তার অসুস্থ বৃদ্ধ মায়ের কাছে রেখে অভাব অনটনের জীবনে বেঁচে থাকতে মানুষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজের পাশাপাশি ভাওয়াল মির্জাপুরে অবস্থিত ওয়াশ গার্মেন্টসে সাব কন্ট্রাকে কাজের উদ্দেশ্যে ২০/০৯/২০২৫ শনিবার সকাল ০৭.০০ ঘটিকার সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে অটোরিকশা যোগে ভাওয়াল মির্জাপুর ওয়াশ গার্মেন্টসে যাওয়ার পথে এই অপহরনের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী সালমা আক্তার বলেন, আমি গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে অটোরিকশাযোগে সালনা পার হলে অজ্ঞাতনামা দুজন যুবক যাত্রি হিসেবে অটোতে উঠে বসে। এরপর দক্ষিণ সালনা ইপসা গেইটের সামনে পৌঁছালে আরো দুজন অজ্ঞাতনামা যুবক যাত্রি হিসেবে অটোতে উঠে আমার পাশে বসে এবং আমাকে বলে আপনার মুখে গন্ধ আর আপনি খুব ঘেমে গেছেন ,এই বলে একজন রুমাল দিয়ে মুখে মুছে দিলে আমি আর কিছুই বলতে পারিনা। ঐদিনই দুপুর অনুমান ১২.৩০ মিনিটের সময় আমার জ্ঞান ফিরলে আমি দেখি যে আমি একটি জঙ্গলের ভেতরে আছি এবং দেখি যে সেখানে আমার প্রতিবেশী রবিন,জনি,রনি,সহ আরো কয়েকজন মিলে মদ্যপানে এবং ইয়াবা সেবনে ব্যস্ত আছে। আমি তাদেরকে আমার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে এবং কিভাবে সেখানে অবস্থান করছি সে বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলে তোকে অপহরণ করা হয়েছে আর তোর বাড়িতে কথা বলে পঁচিশ হাজার টাকা দিতে বল্ । আমি এতে অসম্মতি প্রকাশ করলে তারা আমাকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে গালিগালাজ করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তাদের মধ্যে থাকা আমজাদ নামের একজন আমার সাথে থাকা মোবাইল ফোন থেকে এবং পরে তাদের নিজেদের মোবাইল ফোন থেকে আমার ছোট বোনকে কল করে আমাকে কথা বলিয়ে দেয় এবং তারাও কথা বলে পঁচিশ হাজার টাকা বিকাশে পাঠাতে বলে এবং পুলিশ সহ যে কাউকে এবিষয়ে জানালে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাকে ভয় দেখায়। এরপর আমার বোন টাকা নিয়ে আসবে বলে ঠিকানা চাইলে এবং উভয়ের মধ্যে কয়েকঘণ্টা যোগাযোগের পর টাকা না পেয়ে তারা মোবাইল ফোন বন্ধ করে আমাকে মারধর করে ।আমি অত্যন্ত ভয় পেয়ে প্রতিবেশী রবিন, জনি,ও রনিকে বারবার অনুরোধ করি আমাকে ছেড়ে দিতে। তারা আমার কোনো কথা না শুনে আমাকে মারপিট করে এবং সন্ধ্যা সারে ছয়টার পর থেকে রাত তিনটা পর্যন্ত রবিন জনি রনি আমজাদ সহ আরো কয়েকজন মিলে আমাকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষন শেষে আমাকে গাছের সাথে হাতপা বেঁধে রেখে শিয়াল কুকুর ছিঁড়ে খাবে বলে তারা চলে যায়। আমি দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করে বাঁধন খুলে সেখান থেকে বের হয়ে কাদামাখা বিধ্বস্ত অবস্থায় আসার সময় রাস্তার আশেপাশের দোকানের লোকজন পাগল বা খারাপ মহিলা ভেবে কেউ কোনো সাহায্য করেনি বরং টিটকারী মারছিল। আমি ২১/০৯/২০২৫ তারিখ সকাল অনুমান নয়টার দিকে বাসায় এসে মা বোনকে বিস্তারিত জানাই। গাজীপুর বাসন থানায় গেলে সেখান থেকে গাজীপুর সদর থানায় পাঠালে পুলিশ বলেন তদন্ত করে প্রয়োজনে মামলা নিবেন।বিস্তারিত ঘটনা শুনে দ্রুত পুলিশ ভিকটিমের বর্ননামতো দেখানো পথ ধরে গিয়ে ভাওয়াল মির্জাপুর ভাওরাইদ হাতিয়াব অঞ্চলের শালবনে পৌঁছে অপহরণের ঘটনাস্থল ঘুরে আসলে গাজীপুর সদর থানার ওসি মোঃ মেহেদি হাসান পি পি এম. এ বিষয়ে ভিকটিম সালমা আক্তার কে বাদী করে এজাহার গ্রহণ করেন । ১ . মোঃ রবিন সরকার,বয়স ৩০,পিতার নাম:মৃত বাচ্চু সরকার, ঠিকানা: স্থায়ী গ্রাম -দিঘীরচালা, উপজেলা থানা -বাসন, ২.মো: জনি,বয়স:৩৮,পিতা-মৃত রশিদ,ঠিকানা: স্থায়ী গ্রাম: দিঘীরচালা ,থানা-বাসন, ৩ .মো: রনি ,বয়স:৩৫, পিতা-মৃত রশিদ,ঠিকানা: স্থায়ী গ্রাম:দিঘীরচালা,থানা-বাসন সর্ব জেলা গাজীপুর মহানগর গাজীপুর, বাংলাদেশ ৪.অজ্ঞাতনামা দুইজন কে আসামি করে ৭/৮/৯(৩)নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০(সংশোধনী -২০০০)তৎসহ ৩২৩/৩২৮ পেনাল কোড১৮৬০; ধারায় চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করতঃ মুক্তিপনের দাবিতে আটক রাখিয়া গনধর্ষন সহ মারপিট করে।পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে মামলা রুজ করে।গাজীপুর সদর থানার ওসি মোঃ মেহেদি হাসান পি পি এম জানান আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে এবং সালমা আক্তার কে সঠিক বিচার দিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।