মোঃ সাকিল তালুকদার, স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
বর্তমান সময়টা মুসলিমদের জন্য খুবই কঠিন ও দুর্বিষহ। মুসলিমরা আজকে পৃথিবীর সকল জায়গায় নির্যাতিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে মানবতা শব্দ টা যেন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পৃথিবীর পরাশক্তিরা শুধু মানবতা মানবতা বলে চিল্লাচিল্লি করে তারা আজকে চুপ। তারা বিভিন্ন ঘটনাতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অভিযোগ তোলে মুসলিমদেরকে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। তারা আজকে ফিলিস্তিন কে ধ্বংস করে দিয়েছে। হাজার হাজার নারী শিশু বৃদ্ধ কে বিনা অপরাধে হত্যা করেছে। ফিলিস্তিনের গাজা এখন মৃত্যুপুরী তে পরিণত করেছে ইসরাইল ও আমেরিকার যৌথ আক্রমণে কিন্তু জাতিসংঘ নামক প্রহসন মূলক সংগঠন কোনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ। পরাশক্তিদের সমর্থনে ইসরাইলি বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে ফিলিস্তিনে। আর এই গণহত্যা তে মৌন সমর্থন দিচ্ছে মুনাফিক শক্তিধর মুসলিম দেশের শাসকরা।
আন্তর্জাতিক বিষয়ে পিএইচডি হোল্ডার ইবরাহিম কারাতাস ডেইলি সাবাহকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু মুসলিম দেশগুলো প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। গাজার বিষয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর অবস্থান অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। তারা কেবল ইসরায়েলের চলমান হত্যাযজ্ঞের নিন্দা করছে, যদিও তারা ভালো করেই জানে যে, শুধু নিন্দা জানানো যথেষ্ট নয়। এই নিন্দা তাদের নিষ্ক্রিয়তার লজ্জা ঢাকার কৌশল মাত্র।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর মুসলিম স্কলারের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত আছেন আলী মুহিউদ্দিন আল-কারাদাগি। আনাদোলু এজেন্সির এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসলামি বিশ্ব তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তাই সম্মিলিতভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় ইসলামি বিশ্ব তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। প্রথম দল নীরব থেকেছে, যেন এই গণহত্যা ও হামলাগুলো কখনো ঘটেনি। দ্বিতীয় দল কেবল নীরব থাকেনি, বরং ইসরায়েলকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান করেছে। তৃতীয় দল হলো তুরস্ক, কাতার, মালয়েশিয়া, আলজেরিয়া ও কুয়েতের মতো স্বল্পসংখ্যক দেশ, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে এটি ইসরায়েলকে থামানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। গণহত্যা, মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। তারা আমাদের জমি ও ঘরবাড়ি দখল করে নিয়েছে। এই বছর প্রকৃত অর্থে ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। মসজিদ, হাসপাতাল, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অবকাঠামো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইতিহাস কখনো এমন ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা প্রত্যক্ষ করেনি। এই ঘটনাগুলো মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি। ৫০টিরও বেশি ইসলামি দেশ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, গত বছর বাহরাইন ঘোষণা দিয়েছিল, ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে, যা ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান করবে দ্বিরাষ্ট্র গঠনের ভিত্তিতে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের দখলকৃত সব আরব ভূমি মুক্ত করা হবে এবং একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে, যা আন্তর্জাতিক বৈধতা সংক্রান্ত প্রস্তাবসমূহ অনুসারে শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে ইসরায়েলের পাশাপাশি বসবাস করবে। এটিই ন্যায়সঙ্গত ও পূর্ণাঙ্গ শান্তি অর্জনের উপায়।’ যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরকার দ্বিরাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে, কিন্তু বাস্তবে এটির বিরোধিতা করে আসছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ দেওয়ার বিরুদ্ধে একমাত্র ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ প্রতিরোধ করবে। কিন্তু এই বাধাও প্রতিহত করা সম্ভব, যদি আরব দেশগুলো শক্তিশালী ঐক্যের মাধ্যমে এক প্ল্যাটফর্মে আসে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য বিশ্ব সম্মেলন আয়োজিত হলে আশা করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পাল্টাবে। মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হলে তার নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার কৌশলগত অবস্থান, অর্থনৈতিক ভূমিকা এবং বিশ্বশক্তি ব্যবস্থায় প্রভাব রাখতে গেলে আরব বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক দরকার। বৃহত্তর ইসলামি বিশ্ব ও বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রকে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। গাজা গণহত্যা চলমান থাকলেও বিশ্ব বিবেক আজ নিশ্চুপ। কোথায় মানবাধিকারমুসলিমদের কে শক্তি সঞ্চয় করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমস্ত মুসলমান ভাই ভাই ও একটি দেহের মতো। দেহের একটি অঙ্গ যদি ঠিকমতো কাজ না করে তাহলে শারীরিক ক্রিয়া যেমন ব্যাহত হয়, ঠিক তেমনি একজন মুসলিম ভালো না থাকলে অন্যরাও ভালো থাকতে পারে না। মুসলিম হিসেবে আমাদের লজ্জা অনুভব হয় যে, আমরা এখনও এই অসহ্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে পারছি না। মুসলমানদের পুরোনো ঐতিহ্য আমরা ভুলে যেতে বসেছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরি গত ২০ মার্চ ২০২৫,দৈনিক প্রথম আলো কে বলেন, ‘আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আজ এই নৃশংস ঘটনা ঘটছে।’
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ গত ২০ মার্চ ২০২৫,দৈনিক প্রথম আলো কে বলেন, আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা নিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরায়েল, তাহলে তার আরেক হাত সৌদি আরব। জাতিসংঘ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা কর্তৃত্ব করছিল এবং এখনো করছে। আরব দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও সংহতির অনুভূতি থাকলেও এসব দেশে বলতে গেলে কোন বিক্ষোভই হয়নি। কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ওয়ালিদ কাজিয়া বিবিসি মুন্ডোকে বলেন, আরব দেশগুলোর সরকারের প্রতিক্রিয়া খুবই হতাশাজনক এবং না থাকার মতো ।
ইসরায়েলের প্রথাগত সমালোচনা ছাড়া এবং কাতার ও মিশরের সরকারের পক্ষ থেকে সংঘাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব ছাড়া, কেউ ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেয়নি, কাজিয়া আরো বলেন, কোনো আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি বা এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি যা ইসরায়েলের ওপর কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে বা যুদ্ধ বন্ধ করতে সাহায্য করবে। দোহা ইন্সটিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক তৈমুর কারমুত বিবিসি মুন্ডোকে বলেছেন, এই সময়ে, ইসরায়েলি রাষ্ট্রকে প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শক্তির সম্প্রসারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। এই ঔপনিবেশিক শক্তি মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে গেলেও ইসরায়েলকে তার স্বার্থ রক্ষার এজেন্ট হিসেবে রেখে গিয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে মিশর, সিরিয়া ও জর্ডানের মতো দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি নিজেদের জাতীয় স্বার্থও রক্ষা করেছে।আরবরা একটি পরিচয়, একটি ভাষা এবং বহুলাংশে একটি ধর্মের সাথে জুড়ে রয়েছে।আরবরা একটি পরিচয়, একটি ভাষা এবং বহুলাংশে একটি ধর্মের সাথে জুড়ে রয়েছে।যাই হোক, সেই যুদ্ধগুলো এখন কেবলই অতীত। মিশর ও জর্ডান কয়েক দশক আগে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছেমরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। অথচ কয়েক বছর আগেও ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক রাখাকে এই অঞ্চলে ন্যক্কারজনক বলে ধরা হতো।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজারেন সেন্টার ফর ইসরায়েল স্টাডিজের পরিচালক ডভ ওয়াক্সম্যানের মতে, “সাম্প্রতিক সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বহু দশক ধরে, প্রতিটি আরব দেশ তাদের নিজস্ব স্বার্থ নিয়েই ছিল।তারা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন এবং সংহতির কথা বললেও, তারা তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছে।
চাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের গবেষক ইলহাম ফাখরো বলেছেন, আরব বিশ্বের জনমত দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।তিনি বলেছেন, গাজার বিপর্যস্ত নাগরিকদের প্রতি আরব দেশগুলোর জনগণের অনেক সহানুভূতি রয়েছে এবং তারা চায় তাদের সরকার ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও কিছু করুক।তারা চায় তাদের দেশ ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুক এবং অন্ততপক্ষে তাদের দেশ থেকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করুক। কিন্তু এমনটা হয়নি।মুসলমানদের অধঃপতনের জন্য দায়ী,,,
মুনাফিক মুসলিম শাসকরা বর্তমান সময়টা মুসলিমদের জন্য খুবই কঠিন ও দুর্বিষহ। মুসলিমরা আজকে পৃথিবীর সকল জায়গায় নির্যাতিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে মানবতা শব্দ টা যেন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পৃথিবীর পরাশক্তিরা শুধু মানবতা মানবতা বলে চিল্লাচিল্লি করে তারা আজকে চুপ। তারা বিভিন্ন ঘটনাতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অভিযোগ তোলে মুসলিমদেরকে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। তারা আজকে ফিলিস্তিন কে ধ্বংস করে দিয়েছে। হাজার হাজার নারী শিশু বৃদ্ধ কে বিনা অপরাধে হত্যা করেছে। ফিলিস্তিনের গাজা এখন মৃত্যুপুরী তে পরিণত করেছে ইসরাইল ও আমেরিকার যৌথ আক্রমণে কিন্তু জাতিসংঘ নামক প্রহসন মূলক সংগঠন কোনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ। পরাশক্তিদের সমর্থনে ইসরাইলি বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে ফিলিস্তিনে। আর এই গণহত্যা তে মৌন সমর্থন দিচ্ছে মুনাফিক শক্তিধর মুসলিম দেশের শাসকরা। আন্তর্জাতিক বিষয়ে পিএইচডি হোল্ডার ইবরাহিম কারাতাস ডেইলি সাবাহকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু মুসলিম দেশগুলো প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। গাজার বিষয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর অবস্থান অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। তারা কেবল ইসরায়েলের চলমান হত্যাযজ্ঞের নিন্দা করছে, যদিও তারা ভালো করেই জানে যে, শুধু নিন্দা জানানো যথেষ্ট নয়। এই নিন্দা তাদের নিষ্ক্রিয়তার লজ্জা ঢাকার কৌশল মাত্র। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর মুসলিম স্কলারের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত আছেন আলী মুহিউদ্দিন আল-কারাদাগি। আনাদোলু এজেন্সির এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসলামি বিশ্ব তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তাই সম্মিলিতভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় ইসলামি বিশ্ব তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। প্রথম দল নীরব থেকেছে, যেন এই গণহত্যা ও হামলাগুলো কখনো ঘটেনি। দ্বিতীয় দল কেবল নীরব থাকেনি, বরং ইসরায়েলকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান করেছে। তৃতীয় দল হলো তুরস্ক, কাতার, মালয়েশিয়া, আলজেরিয়া ও কুয়েতের মতো স্বল্পসংখ্যক দেশ, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে এটি ইসরায়েলকে থামানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। গণহত্যা, মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। তারা আমাদের জমি ও ঘরবাড়ি দখল করে নিয়েছে। এই বছর প্রকৃত অর্থে ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। মসজিদ, হাসপাতাল, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অবকাঠামো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইতিহাস কখনো এমন ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা প্রত্যক্ষ করেনি। এই ঘটনাগুলো মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি। ৫০টিরও বেশি ইসলামি দেশ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, গত বছর বাহরাইন ঘোষণা দিয়েছিল, ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে, যা ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান করবে দ্বিরাষ্ট্র গঠনের ভিত্তিতে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের দখলকৃত সব আরব ভূমি মুক্ত করা হবে এবং একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে, যা আন্তর্জাতিক বৈধতা সংক্রান্ত প্রস্তাবসমূহ অনুসারে শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে ইসরায়েলের পাশাপাশি বসবাস করবে। এটিই ন্যায়সঙ্গত ও পূর্ণাঙ্গ শান্তি অর্জনের উপায়।’ যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরকার দ্বিরাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে, কিন্তু বাস্তবে এটির বিরোধিতা করে আসছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ দেওয়ার বিরুদ্ধে একমাত্র ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ প্রতিরোধ করবে। কিন্তু এই বাধাও প্রতিহত করা সম্ভব, যদি আরব দেশগুলো শক্তিশালী ঐক্যের মাধ্যমে এক প্ল্যাটফর্মে আসে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য বিশ্ব সম্মেলন আয়োজিত হলে আশা করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পাল্টাবে। মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হলে তার নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার কৌশলগত অবস্থান, অর্থনৈতিক ভূমিকা এবং বিশ্বশক্তি ব্যবস্থায় প্রভাব রাখতে গেলে আরব বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক দরকার। বৃহত্তর ইসলামি বিশ্ব ও বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রকে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। গাজা গণহত্যা চলমান থাকলেও বিশ্ব বিবেক আজ নিশ্চুপ। কোথায় মানবাধিকারমুসলিমদের কে শক্তি সঞ্চয় করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমস্ত মুসলমান ভাই ভাই ও একটি দেহের মতো। দেহের একটি অঙ্গ যদি ঠিকমতো কাজ না করে তাহলে শারীরিক ক্রিয়া যেমন ব্যাহত হয়, ঠিক তেমনি একজন মুসলিম ভালো না থাকলে অন্যরাও ভালো থাকতে পারে না। মুসলিম হিসেবে আমাদের লজ্জা অনুভব হয় যে, আমরা এখনও এই অসহ্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে পারছি না। মুসলমানদের পুরোনো ঐতিহ্য আমরা ভুলে যেতে বসেছি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরি গত ২০ মার্চ ২০২৫,দৈনিক প্রথম আলো কে বলেন, ‘আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আজ এই নৃশংস ঘটনা ঘটছে।’ অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ গত ২০ মার্চ ২০২৫,দৈনিক প্রথম আলো কে বলেন, আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা নিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরায়েল, তাহলে তার আরেক হাত সৌদি আরব। জাতিসংঘ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা কর্তৃত্ব করছিল এবং এখনো করছে। আরব দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও সংহতির অনুভূতি থাকলেও এসব দেশে বলতে গেলে কোন বিক্ষোভই হয়নি। কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ওয়ালিদ কাজিয়া বিবিসি মুন্ডোকে বলেন, আরব দেশগুলোর সরকারের প্রতিক্রিয়া খুবই হতাশাজনক এবং না থাকার মতো ।ইসরায়েলের প্রথাগত সমালোচনা ছাড়া এবং কাতার ও মিশরের সরকারের পক্ষ থেকে সংঘাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব ছাড়া, কেউ ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেয়নি, কাজিয়া আরো বলেন, কোনো আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি বা এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি যা ইসরায়েলের ওপর কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে বা যুদ্ধ বন্ধ করতে সাহায্য করবে। দোহা ইন্সটিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক তৈমুর কারমুত বিবিসি মুন্ডোকে বলেছেন, এই সময়ে, ইসরায়েলি রাষ্ট্রকে প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শক্তির সম্প্রসারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। এই ঔপনিবেশিক শক্তি মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে গেলেও ইসরায়েলকে তার স্বার্থ রক্ষার এজেন্ট হিসেবে রেখে গিয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে মিশর, সিরিয়া ও জর্ডানের মতো দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি নিজেদের জাতীয় স্বার্থও রক্ষা করেছে।আরবরা একটি পরিচয়, একটি ভাষা এবং বহুলাংশে একটি ধর্মের সাথে জুড়ে রয়েছে।আরবরা একটি পরিচয়, একটি ভাষা এবং বহুলাংশে একটি ধর্মের সাথে জুড়ে রয়েছে।যাই হোক, সেই যুদ্ধগুলো এখন কেবলই অতীত। মিশর ও জর্ডান কয়েক দশক আগে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছেমরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। অথচ কয়েক বছর আগেও ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক রাখাকে এই অঞ্চলে ন্যক্কারজনক বলে ধরা হতো।ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজারেন সেন্টার ফর ইসরায়েল স্টাডিজের পরিচালক ডভ ওয়াক্সম্যানের মতে, “সাম্প্রতিক সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বহু দশক ধরে, প্রতিটি আরব দেশ তাদের নিজস্ব স্বার্থ নিয়েই ছিল।তারা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন এবং সংহতির কথা বললেও, তারা তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছে।চাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের গবেষক ইলহাম ফাখরো বলেছেন, আরব বিশ্বের জনমত দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।তিনি বলেছেন, গাজার বিপর্যস্ত নাগরিকদের প্রতি আরব দেশগুলোর জনগণের অনেক সহানুভূতি রয়েছে এবং তারা চায় তাদের সরকার ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও কিছু করুক।তারা চায় তাদের দেশ ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুক এবং অন্ততপক্ষে তাদের দেশ থেকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করুক। কিন্তু এমনটা হয়নি।মুসলমানদের অধঃপতনের জন্য দায়ী,,, মুনাফিক মুসলিম শাসকরা মোঃ সাকিল তালুকদার, স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল। বর্তমান সময়টা মুসলিমদের জন্য খুবই কঠিন ও দুর্বিষহ। মুসলিমরা আজকে পৃথিবীর সকল জায়গায় নির্যাতিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে মানবতা শব্দ টা যেন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পৃথিবীর পরাশক্তিরা শুধু মানবতা মানবতা বলে চিল্লাচিল্লি করে তারা আজকে চুপ। তারা বিভিন্ন ঘটনাতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অভিযোগ তোলে মুসলিমদেরকে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। তারা আজকে ফিলিস্তিন কে ধ্বংস করে দিয়েছে। হাজার হাজার নারী শিশু বৃদ্ধ কে বিনা অপরাধে হত্যা করেছে। ফিলিস্তিনের গাজা এখন মৃত্যুপুরী তে পরিণত করেছে ইসরাইল ও আমেরিকার যৌথ আক্রমণে কিন্তু জাতিসংঘ নামক প্রহসন মূলক সংগঠন কোনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ। পরাশক্তিদের সমর্থনে ইসরাইলি বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে ফিলিস্তিনে। আর এই গণহত্যা তে মৌন সমর্থন দিচ্ছে মুনাফিক শক্তিধর মুসলিম দেশের শাসকরা। আন্তর্জাতিক বিষয়ে পিএইচডি হোল্ডার ইবরাহিম কারাতাস ডেইলি সাবাহকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু মুসলিম দেশগুলো প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। গাজার বিষয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর অবস্থান অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। তারা কেবল ইসরায়েলের চলমান হত্যাযজ্ঞের নিন্দা করছে, যদিও তারা ভালো করেই জানে যে, শুধু নিন্দা জানানো যথেষ্ট নয়। এই নিন্দা তাদের নিষ্ক্রিয়তার লজ্জা ঢাকার কৌশল মাত্র। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর মুসলিম স্কলারের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত আছেন আলী মুহিউদ্দিন আল-কারাদাগি। আনাদোলু এজেন্সির এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসলামি বিশ্ব তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তাই সম্মিলিতভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় ইসলামি বিশ্ব তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। প্রথম দল নীরব থেকেছে, যেন এই গণহত্যা ও হামলাগুলো কখনো ঘটেনি। দ্বিতীয় দল কেবল নীরব থাকেনি, বরং ইসরায়েলকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান করেছে। তৃতীয় দল হলো তুরস্ক, কাতার, মালয়েশিয়া, আলজেরিয়া ও কুয়েতের মতো স্বল্পসংখ্যক দেশ, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে এটি ইসরায়েলকে থামানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। গণহত্যা, মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। তারা আমাদের জমি ও ঘরবাড়ি দখল করে নিয়েছে। এই বছর প্রকৃত অর্থে ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। মসজিদ, হাসপাতাল, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অবকাঠামো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইতিহাস কখনো এমন ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা প্রত্যক্ষ করেনি। এই ঘটনাগুলো মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি। ৫০টিরও বেশি ইসলামি দেশ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, গত বছর বাহরাইন ঘোষণা দিয়েছিল, ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে, যা ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান করবে দ্বিরাষ্ট্র গঠনের ভিত্তিতে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের দখলকৃত সব আরব ভূমি মুক্ত করা হবে এবং একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে, যা আন্তর্জাতিক বৈধতা সংক্রান্ত প্রস্তাবসমূহ অনুসারে শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে ইসরায়েলের পাশাপাশি বসবাস করবে। এটিই ন্যায়সঙ্গত ও পূর্ণাঙ্গ শান্তি অর্জনের উপায়।’ যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরকার দ্বিরাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে, কিন্তু বাস্তবে এটির বিরোধিতা করে আসছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ দেওয়ার বিরুদ্ধে একমাত্র ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ প্রতিরোধ করবে। কিন্তু এই বাধাও প্রতিহত করা সম্ভব, যদি আরব দেশগুলো শক্তিশালী ঐক্যের মাধ্যমে এক প্ল্যাটফর্মে আসে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য বিশ্ব সম্মেলন আয়োজিত হলে আশা করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পাল্টাবে। মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হলে তার নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার কৌশলগত অবস্থান, অর্থনৈতিক ভূমিকা এবং বিশ্বশক্তি ব্যবস্থায় প্রভাব রাখতে গেলে আরব বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক দরকার। বৃহত্তর ইসলামি বিশ্ব ও বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রকে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। গাজা গণহত্যা চলমান থাকলেও বিশ্ব বিবেক আজ নিশ্চুপ। কোথায় মানবাধিকারমুসলিমদের কে শক্তি সঞ্চয় করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমস্ত মুসলমান ভাই ভাই ও একটি দেহের মতো। দেহের একটি অঙ্গ যদি ঠিকমতো কাজ না করে তাহলে শারীরিক ক্রিয়া যেমন ব্যাহত হয়, ঠিক তেমনি একজন মুসলিম ভালো না থাকলে অন্যরাও ভালো থাকতে পারে না। মুসলিম হিসেবে আমাদের লজ্জা অনুভব হয় যে, আমরা এখনও এই অসহ্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে পারছি না। মুসলমানদের পুরোনো ঐতিহ্য আমরা ভুলে যেতে বসেছি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরি গত ২০ মার্চ ২০২৫,দৈনিক প্রথম আলো কে বলেন, ‘আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আজ এই নৃশংস ঘটনা ঘটছে। ’অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ গত ২০ মার্চ ২০২৫,দৈনিক প্রথম আলো কে বলেন, আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা নিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরায়েল, তাহলে তার আরেক হাত সৌদি আরব। জাতিসংঘ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা কর্তৃত্ব করছিল এবং এখনো করছে। আরব দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও সংহতির অনুভূতি থাকলেও এসব দেশে বলতে গেলে কোন বিক্ষোভই হয়নি। কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ওয়ালিদ কাজিয়া বিবিসি মুন্ডোকে বলেন, আরব দেশগুলোর সরকারের প্রতিক্রিয়া খুবই হতাশাজনক এবং না থাকার মতো ।ইসরায়েলের প্রথাগত সমালোচনা ছাড়া এবং কাতার ও মিশরের সরকারের পক্ষ থেকে সংঘাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব ছাড়া, কেউ ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেয়নি, কাজিয়া আরো বলেন, কোনো আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি বা এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি যা ইসরায়েলের ওপর কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে বা যুদ্ধ বন্ধ করতে সাহায্য করবে। দোহা ইন্সটিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক তৈমুর কারমুত বিবিসি মুন্ডোকে বলেছেন, এই সময়ে, ইসরায়েলি রাষ্ট্রকে প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শক্তির সম্প্রসারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। এই ঔপনিবেশিক শক্তি মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে গেলেও ইসরায়েলকে তার স্বার্থ রক্ষার এজেন্ট হিসেবে রেখে গিয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে মিশর, সিরিয়া ও জর্ডানের মতো দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি নিজেদের জাতীয় স্বার্থও রক্ষা করেছে।আরবরা একটি পরিচয়, একটি ভাষা এবং বহুলাংশে একটি ধর্মের সাথে জুড়ে রয়েছে।আরবরা একটি পরিচয়, একটি ভাষা এবং বহুলাংশে একটি ধর্মের সাথে জুড়ে রয়েছে।যাই হোক, সেই যুদ্ধগুলো এখন কেবলই অতীত। মিশর ও জর্ডান কয়েক দশক আগে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছেমরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। অথচ কয়েক বছর আগেও ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক রাখাকে এই অঞ্চলে ন্যক্কারজনক বলে ধরা হতো।ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজারেন সেন্টার ফর ইসরায়েল স্টাডিজের পরিচালক ডভ ওয়াক্সম্যানের মতে, “সাম্প্রতিক সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বহু দশক ধরে, প্রতিটি আরব দেশ তাদের নিজস্ব স্বার্থ নিয়েই ছিল।তারা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন এবং সংহতির কথা বললেও, তারা তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছে।চাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের গবেষক ইলহাম ফাখরো বলেছেন, আরব বিশ্বের জনমত দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।তিনি বলেছেন, গাজার বিপর্যস্ত নাগরিকদের প্রতি আরব দেশগুলোর জনগণের অনেক সহানুভূতি রয়েছে এবং তারা চায় তাদের সরকার ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও কিছু করুক।তারা চায় তাদের দেশ ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুক এবং অন্ততপক্ষে তাদের দেশ থেকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করুক। কিন্তু এমনটা হয়নি।মুসলমানদের অধঃপতনের জন্য দায়ী,,, মুনাফিক মুসলিম শাসকরা বর্তমান সময়টা মুসলিমদের জন্য খুবই কঠিন ও দুর্বিষহ। মুসলিমরা আজকে পৃথিবীর সকল জায়গায় নির্যাতিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে মানবতা শব্দ টা যেন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পৃথিবীর পরাশক্তিরা শুধু মানবতা মানবতা বলে চিল্লাচিল্লি করে তারা আজকে চুপ। তারা বিভিন্ন ঘটনাতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অভিযোগ তোলে মুসলিমদেরকে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। তারা আজকে ফিলিস্তিন কে ধ্বংস করে দিয়েছে। হাজার হাজার নারী শিশু বৃদ্ধ কে বিনা অপরাধে হত্যা করেছে। ফিলিস্তিনের গাজা এখন মৃত্যুপুরী তে পরিণত করেছে ইসরাইল ও আমেরিকার যৌথ আক্রমণে কিন্তু জাতিসংঘ নামক প্রহসন মূলক সংগঠন কোনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ। পরাশক্তিদের সমর্থনে ইসরাইলি বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে ফিলিস্তিনে। আর এই গণহত্যা তে মৌন সমর্থন দিচ্ছে মুনাফিক শক্তিধর মুসলিম দেশের শাসকরা। আন্তর্জাতিক বিষয়ে পিএইচডি হোল্ডার ইবরাহিম কারাতাস ডেইলি সাবাহকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু মুসলিম দেশগুলো প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। গাজার বিষয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর অবস্থান অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। তারা কেবল ইসরায়েলের চলমান হত্যাযজ্ঞের নিন্দা করছে, যদিও তারা ভালো করেই জানে যে, শুধু নিন্দা জানানো যথেষ্ট নয়। এই নিন্দা তাদের নিষ্ক্রিয়তার লজ্জা ঢাকার কৌশল মাত্র।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর মুসলিম স্কলারের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত আছেন আলী মুহিউদ্দিন আল-কারাদাগি। আনাদোলু এজেন্সির এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসলামি বিশ্ব তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তাই সম্মিলিতভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় ইসলামি বিশ্ব তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। প্রথম দল নীরব থেকেছে, যেন এই গণহত্যা ও হামলাগুলো কখনো ঘটেনি। দ্বিতীয় দল কেবল নীরব থাকেনি, বরং ইসরায়েলকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান করেছে। তৃতীয় দল হলো তুরস্ক, কাতার, মালয়েশিয়া, আলজেরিয়া ও কুয়েতের মতো স্বল্পসংখ্যক দেশ, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে এটি ইসরায়েলকে থামানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। গণহত্যা, মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। তারা আমাদের জমি ও ঘরবাড়ি দখল করে নিয়েছে। এই বছর প্রকৃত অর্থে ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। মসজিদ, হাসপাতাল, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অবকাঠামো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইতিহাস কখনো এমন ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা প্রত্যক্ষ করেনি। এই ঘটনাগুলো মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি। ৫০টিরও বেশি ইসলামি দেশ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, গত বছর বাহরাইন ঘোষণা দিয়েছিল, ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে, যা ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান করবে দ্বিরাষ্ট্র গঠনের ভিত্তিতে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের দখলকৃত সব আরব ভূমি মুক্ত করা হবে এবং একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে, যা আন্তর্জাতিক বৈধতা সংক্রান্ত প্রস্তাবসমূহ অনুসারে শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে ইসরায়েলের পাশাপাশি বসবাস করবে। এটিই ন্যায়সঙ্গত ও পূর্ণাঙ্গ শান্তি অর্জনের উপায়।’ যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরকার দ্বিরাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে, কিন্তু বাস্তবে এটির বিরোধিতা করে আসছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ দেওয়ার বিরুদ্ধে একমাত্র ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ প্রতিরোধ করবে। কিন্তু এই বাধাও প্রতিহত করা সম্ভব, যদি আরব দেশগুলো শক্তিশালী ঐক্যের মাধ্যমে এক প্ল্যাটফর্মে আসে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য বিশ্ব সম্মেলন আয়োজিত হলে আশা করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পাল্টাবে। মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হলে তার নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার কৌশলগত অবস্থান, অর্থনৈতিক ভূমিকা এবং বিশ্বশক্তি ব্যবস্থায় প্রভাব রাখতে গেলে আরব বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক দরকার। বৃহত্তর ইসলামি বিশ্ব ও বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রকে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে।
গাজা গণহত্যা চলমান থাকলেও বিশ্ব বিবেক আজ নিশ্চুপ। কোথায় মানবাধিকারমুসলিমদের কে শক্তি সঞ্চয় করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমস্ত মুসলমান ভাই ভাই ও একটি দেহের মতো। দেহের একটি অঙ্গ যদি ঠিকমতো কাজ না করে তাহলে শারীরিক ক্রিয়া যেমন ব্যাহত হয়, ঠিক তেমনি একজন মুসলিম ভালো না থাকলে অন্যরাও ভালো থাকতে পারে না। মুসলিম হিসেবে আমাদের লজ্জা অনুভব হয় যে, আমরা এখনও এই অসহ্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে পারছি না। মুসলমানদের পুরোনো ঐতিহ্য আমরা ভুলে যেতে বসেছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরি গত ২০ মার্চ ২০২৫,দৈনিক প্রথম আলো কে বলেন, ‘আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আজ এই নৃশংস ঘটনা ঘটছে।’
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ গত ২০ মার্চ ২০২৫,দৈনিক প্রথম আলো কে বলেন, আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা নিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরায়েল, তাহলে তার আরেক হাত সৌদি আরব। জাতিসংঘ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা কর্তৃত্ব করছিল এবং এখনো করছে।
আরব দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও সংহতির অনুভূতি থাকলেও এসব দেশে বলতে গেলে কোন বিক্ষোভই হয়নি।
কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ওয়ালিদ কাজিয়া বিবিসি মুন্ডোকে বলেন, আরব দেশগুলোর সরকারের প্রতিক্রিয়া খুবই হতাশাজনক এবং না থাকার মতো ।
ইসরায়েলের প্রথাগত সমালোচনা ছাড়া এবং কাতার ও মিশরের সরকারের পক্ষ থেকে সংঘাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব ছাড়া, কেউ ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেয়নি, কাজিয়া আরো বলেন, কোনো আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি বা এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি যা ইসরায়েলের ওপর কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে বা যুদ্ধ বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
দোহা ইন্সটিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক তৈমুর কারমুত বিবিসি মুন্ডোকে বলেছেন, এই সময়ে, ইসরায়েলি রাষ্ট্রকে প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শক্তির সম্প্রসারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। এই ঔপনিবেশিক শক্তি মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে গেলেও ইসরায়েলকে তার স্বার্থ রক্ষার এজেন্ট হিসেবে রেখে গিয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে মিশর, সিরিয়া ও জর্ডানের মতো দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি নিজেদের জাতীয় স্বার্থও রক্ষা করেছে।আরবরা একটি পরিচয়, একটি ভাষা এবং বহুলাংশে একটি ধর্মের সাথে জুড়ে রয়েছে।আরবরা একটি পরিচয়, একটি ভাষা এবং বহুলাংশে একটি ধর্মের সাথে জুড়ে রয়েছে।যাই হোক, সেই যুদ্ধগুলো এখন কেবলই অতীত। মিশর ও জর্ডান কয়েক দশক আগে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছেমরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। অথচ কয়েক বছর আগেও ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক রাখাকে এই অঞ্চলে ন্যক্কারজনক বলে ধরা হতো।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজারেন সেন্টার ফর ইসরায়েল স্টাডিজের পরিচালক ডভ ওয়াক্সম্যানের মতে, “সাম্প্রতিক সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বহু দশক ধরে, প্রতিটি আরব দেশ তাদের নিজস্ব স্বার্থ নিয়েই ছিল।তারা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন এবং সংহতির কথা বললেও, তারা তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছে।
চাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের গবেষক ইলহাম ফাখরো বলেছেন, আরব বিশ্বের জনমত দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।তিনি বলেছেন, গাজার বিপর্যস্ত নাগরিকদের প্রতি আরব দেশগুলোর জনগণের অনেক সহানুভূতি রয়েছে এবং তারা চায় তাদের সরকার ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও কিছু করুক।তারা চায় তাদের দেশ ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুক এবং অন্ততপক্ষে তাদের দেশ থেকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করুক। কিন্তু এমনটা হয়নি।